বিশেষ প্রতিবেদক :
কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের কাঠালিয়ামুড়া এলাকায় পাষন্ড পিতার হাতেই কন্যা ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
খবর পেয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা নোমান হোসেন প্রিন্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অপরাধীদের ধরতে নির্দেশন দিয়েছেন। ধর্ষক পাষন্ড ব্যক্তির নাম কলিম উল্লাহ।
জানা যায়, নিজের অপরাধ ঢাকতে ফুফাতো ভাইয়ের সাথে মেয়ের সাথে বিয়ে দেয় কলিম উল্লাহ। কলিম উল্লাহ শিশু কন্যাকে বিয়ে দেয়ার কয়েক দিনের মাথায় সন্তান সম্ভবনা হলে ধর্ষণের বিষয়টি সামনে চলে আসে। বিয়ের পরপরই সন্তান পেটে আসায় শ্বাশুড় লোকজন মারধর শুরু করে। তাদের অত্যচার সহ্য করতে না পেরে নানার বাড়িতে পালিয়ে যায়। সেখানেই মা’কে ঘটনার বিস্তারিত জানালে মা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন।
ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ধর্ষক পিতাকে আটক করতে নির্দেশনা দেন।
কক্সবাজার মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে অভিযুক্ত পিতাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। সে এখনো ধর্ষণের বিষয়ে কিছু বলেনি। তার বিরুদ্ধে মামলা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এ দিকে এ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজের পেইজবুকে একটি স্টেটাস দেন। পাঠকের সুবিধার্থে তা হুবুহু তুলে ধরা হলো–
কক্সবাজার সদর এর পিএমখালী ইউনিয়নের কাঠালিয়ামুড়া নামক স্থানে পাষন্ড পিতা কর্তৃক তার কন্যাকে ধর্ষণ এর অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষিতা মেয়েটির নাম সাফামারওয়া (বয়স ১৩) এবং সে স্থানীয় পিএখালী উচ্চ বিদ্যালয় এর ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী।
ধর্ষিতা মেয়ে ও তার মা এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিএমখালী ইউনিয়নের কাঠালিয়ামুড়া নিবাসী জনাব কলিম উল্লাহ্ এর সাথে জুমছড়ি নিবাসী খোরশিদা বেগমের বিবাহ হলেও গত ২০১৬ সালের ডিসেম্বর এ তাদের তালাক হয়। কলিমউল্লাহ্ এবং খোরশিদা বেগম এর দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তাহাদের মধ্যে তালাকের পর ছোট কন্যা মায়ের সাথে নানার বাড়ীতে চলে অাসলেও বড় কন্যা সাফামারওয়া লেখাপড়ার জন্য তার বাবা কলিম উল্লাহ্ এর কাছে রয়ে যায়। সাফামারওয়া ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থানীয় পিএখালী উচ্চ বিদ্যালয় এর ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী থাকলেও হঠাত একদিন তার বাবা কলিম উল্লাহ্ তার পড়াশোনা বন্ধ করে দেন।
ধর্ষিতার ভাষ্য মতে, ২০১৭ সালের মার্চ মাসের কোন একদিন জনাব কলিম উল্লাহ্ তার কন্যা সাফামারওয়া কে তার সাথে বিছানায় ঘুমাতে বাধ্য করে এবং পরে তাকে সারারাত ধর্ষণ করেন। এই পাষন্ড পিতা তার কন্যাকে প্রতিনিয়ত শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে এবং ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশ এর হুমকি দেয়। একপর্যায়ে মেয়েটির পেটে একটি বাচ্চা চলে অাসায় স্থানীয় মেম্বার জনাব অারিফ উল্লাহ্ এর সহযোগিতায় কলিম উল্লাহ্ সাফামারওয়ার ফুফাতো ভাই ইসমাইল এর সাথে গত জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে বিয়ে দেয়। বিবাহের ৪ দিন পর সাফাওয়া একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। এই পুরো বিষয়টি জানতে পেরে সাফামারওয়ার শ্বশুর বাড়ীর লোকজন তার উপর শারীরিক ও মানষিক অত্যাচার করতে থাকেন। এরই এক পর্যায়ে ২৮ দিনের মাথায় তার কন্যা সন্তানটি মারা যায়। অত্যাচার এর মাত্রা বেড়ে গেলে ১ এপ্রিল ২০১৮ তে সাফামারওয়া তার শ্বশুর বাড়ী হতে পালিয়ে নানার বাড়ীতে মা খোরশিদা বেগম এর কাছে চলে অাসে।
ইতোমধ্যে ধর্ষিতা মেয়ে এবং তার পরিবার এর সকল সদস্যের সাথে দেখা করেছি এবং দ্রুত ন্যায় বিচার নিশ্চিতকল্পে মামলার প্রস্তুতি চলছে। অামি সদর মডেল থানা, কক্সবাজার এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা র সাথে কথা বলেছি এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি জনাব কলিম উল্লাহ্ কে দ্রুত গ্রেপ্তার এর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি।
বিঃদ্রঃ সম্মান রক্ষার্থে ও বিশেষ কারনে ধর্ষিতা মেয়ে ও তার মা এর মুখ ঢেকে দেওয়া হয়েছে।